Monthly Archives: সেপ্টেম্বর 2013
সিডর
সিডর দিয়েছে ডর
বিপন্ন অন্তর
সিডর দিয়েছে স্বজন-হারানো গুমরিত প্রান্তর
দিয়েছে করুণ মৃত্যুর হাহাকার
দিয়ে গেছে খুলে ভয়াল সিডর
বেদনার যত অশ্রুসিক্ত দ্বার
আর দিয়ে গেছে বুকফাটা চিৎকার
ধস্ত বিরান বিবর্ণ সংসার।
বৃক্ষ উজাড়
দুমড়ে-মুচড়ে গেছে বনভূমি। ভার
বইবার নেই সেই প্রকৃতিও
অবিরাম কান্নার
হরিণ চিত্রা নেই
বাঘ বিচিত্রা নেই
থেমে গেছে কবে
বনমোরগের ডাক
অজানা কতযে প্রাণী
গিলেগিলে খেলো ক্রূর বিষখালি বাঁক
তৃণলতা নেই
ধানতে নেই
পুষ্পের প্রিয় অভিপ্রেত নেই
ফসলের গান-সমবেত নেই
দিক সে চিহ্নহীন
পাখি মরে গেছে-
দীপ্ত মুয়াজ্জিন
নীচে নেমে এলো
বন্যাপীড়িত নিষ্ঠুরতম দিন।
বিস্তারিত পড়ুন
শিল্পী-কবি মতিউর রহমান মল্লিক_শরীফ আবদুল গোফরান
তোমরা কবি-গীতিকার মতিউর রহমান মল্লিকের নাম অবশ্যই শুনেছো। আর না শোনারও কথা নয়। কারণ তিনি তো তোমাদের মতো ছোট্ট বন্ধুদের অনেক ভালোবাসতেন। পত্রিকার পাতায় পাতায় ছন্দে ছন্দে তোমাদের জন্য কতো গান-কবিতাই না লিখেছেন। বাংলাসাহিত্যে বিশেষ করে শিশুতোষ সাহিত্যের বাঁকে বাঁকে ছিলো তার বিচরণ। তিনি তোমাদের মতো ছোট্ট কুঁড়িদের কিভাবে মূল্যায়ন করেছেন দেখো-
ফুলকুঁড়িদের মাঝে আমার থাকতে লাগে ভালো
ফুলকুঁড়িরাই জ্বালছে দেশে জ্ঞান-গরীমার আলো।
তারা তো নয় কাগজের ফুল মেকী ফুলের কুঁড়ি।
আসল ফুলের মেলা বসায় সারাটা দেশ জুড়ি।
আশার আলো লুটছে তারা অনেক অনেক পড়ে
পৃথিবীকে গড়ছে তারা নিজকে আগে গড়ে।
তাদের বড়ো ভালোবাসি বড়োই আপন ভাবি
তারাই কভু তুলে নেবে দেশ চালাবার চাবি।
সকল মিথ্যা উৎপাটনে সত্য অবিচল
ফুলকুঁড়িরাই তাড়িয়ে দেবে সকল অমঙ্গল।
তা হলে বুঝতেই পারছো। তিনি তোমাদেরকে কতো ভালোবাসতেন। সেই প্রিয় মানুষটির কথাই তোমাদেরকে বলছিলাম। কবি মতিউর রহমান মল্লিক কোথায় জন্মগ্রহণ করেছেন জানো? বলছি শোন। ১৯৫৬ সালের ১লা মার্চ বাগেরহাট জেলার রায়পাড়ার বারুইপাড়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মুন্সী কায়েম উদ্দিন মল্লিক আর মাতা আছিয়া খাতুন।
বিস্তারিত পড়ুন
ট্রানজিট
ট্রানজিট দাও, ট্রানজিট দাও বন্ধুরা আপাতত।
নাইবা দিলাম জল
নাইবা দিলাম
চালের মতোন বাঁচবার সম্বল।
রাখি-বন্ধন-ঘোড়াতো দিয়েছি
পাঁচ-ছয়টার মতো-
ট্রানজিট দাও, ট্রানজিট দাও বন্ধুরা আপাতত।
সীমান্তে কাড়ি প্রতিদিন বিডিআর
সাধারণ লোক? তাও গাড়ি বর্ডারে
কৃষক-মজুর-গ্রাম্য নির্বিচারে।
গাড়বো না কেনো?
কেনো গাড়বো না?
যা খুশি করতে কেনো পারবো না?
পারবো না কেনো?
পাকওয়ালাদের বারোটা বাজিয়ে
হানাদারদের পাঁজরে ঘা দিয়ে
এইতো সেদিন তোমাদের হাতে
দিয়েছি যে তুলে পতাকা স্বাধীনতার!
ভোলো তাই যতো
বিধিসম্মত
চিরঅত
বিমল ভাষ্য একাত্তরের যুদ্ধের
চেতনার!
এখনি সময়- এবং সময় মতো
ট্রানজিট দাও ভ্রাতৃরা আপাতত।
একাত্তরের বিনিময় দাও
কৃতজ্ঞতার এটাই ক্রান্তি- প্রান্তীয় বস্তুত-
ট্রানজিট দাও, ট্রানজিট দাও ভৃত্যরা আপাতত। বিস্তারিত পড়ুন
স্মৃতি পাতায় মল্লিক_আবদুল হালীম খাঁ
স্মৃতিচারণ করতে কার না ভালো লাগে। আর সে স্মৃতিটা যদি হয় বিশেষ প্রিয়জনের তা হলে ভালোর সঙ্গে আনন্দও জাগে প্রচুর। তার স্মৃতির সঙ্গে নিজকে জড়িয়ে কথা বলতে, তার সঙ্গে নিজের সম্পর্কের কথা অন্যকে জানাতে দারুণ ইচ্ছে করে। কবি গালিব তার প্রিয়তমাকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন :
‘ভালোবাসা অথবা ঘৃণা যা দেবে নেবো তাই,
তোমার সাথে আমার একটা সম্পর্ক চাই।’
আমারও তেমন ইচ্ছে করে। কবি মতিউর রহমান মল্লিক তেমনি আমার প্রিয় একজন মানুষ। তাঁর কাছে গেলে, তাঁর কথা শুনলে মনে হতো একজন দরদী মানুষের কাছে এসেছি এবং একান্ত দরদ মাখা কথা শুনছি। মল্লিক ভাই তাঁর সমবয়সী এবং তাঁর ছোট বড় সবাইকে মনে প্রাণে ভালোবাসতেন ও শ্রদ্ধা করতেন। তাঁর সে শ্রদ্ধা ভালোবাসায় একবিন্দু ফাঁক বা লৌকিকতা ছিল না। সেই মল্লিক ভাইকে নিয়ে লিখতে আনন্দ তো পাচ্ছিই না বরং মনের ভেতরে একদলা কষ্ট অনুভব করছি। এক অব্যক্ত ব্যথা উথলে উঠছে। না আমার মনের কথাগুলো তাঁকে বলতে পারলাম, না তাঁর মনের কথা আমি শুনতে পারলাম। এভাবে না বলে চলে যাওয়ার বেদনা হৃদয়ে বহন করা ভীষণ কষ্টের। এখন শুধু ভাবি কষ্টটুকু আমার মধ্যে থাক, মল্লিক ভাই সুখে থাক। আল্লাহ তাঁকে সুখে রাখুন।
আমার প্রতি তাঁর এতো আন্তরিকতা, ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাবোধ কেন ছিল জানি না। আমি তো ছিলাম তাঁর কাছ থেকে অনেক দূরে গ্রামে-পাড়াগাঁয়। অথচ দেখা হলেই তাঁর কথায় ও আচরণে মনে হতো আমি যেনো তাঁর খুব কাছের মানুষ। সাথী ভাই। একান্ত আপনজন। বিস্তারিত পড়ুন
নীলাকাশের গায়_আসাদুজ্জামান আসাদ
পাখির মত মিষ্টি সুরে গাও যে গানের বুলি
গান শুনিয়ে কেমন করে তোমায় আমি ভুলি
মাটির টানে স্বদেশ প্রেমে জীবন তোমার ভরা
স্মৃতি ভরা তোমার ছবি ভুলব না যে মোরা
‘আরেক আকাশ’ মিষ্টি সুরে গানের পাখি তুমি
‘তোমার ভাষায় তীè ছোরা’ আপন মাতৃভূমি
তোমার ডাকে বাধ মানে না ‘চিত্রল প্রজাপতি’
তোমার লোভে ফুলের বনে হারাই মতি গতি
খুশির টানে নীলাকাশে ‘নিষন্ন পাখি উড়ে’
পাঠক দেখি তোমার কাব্য গভীর মনে পড়ে
‘রঙিন মেঘের পালকি’ দেখি নীলাকাশের গায়ে
স্বদেশ প্রেমে মুগ্ধ তুমি হাটছ নাঙ্গা পায়ে
‘পাহাড়ি এক লড়াকু’যে ‘মহানায়ক’ সেজে
সংকলিত ‘ঝংকার’ যেন হাজার সুরে বাজে
তোমার লিখা হৃদয় মাঝে গানের সুরে গড়া
আমার মনে তোমার কাব্য জ্ঞানে গুণে ভরা।
কবি মল্লিক_সৈয়দ নাজমুল ইসলাম
কবি মল্লিক
তিনি দৈনিক
লিখেছেন কত
গান-কবিতা শত।
ঘুরেছেন দেশ-বিদেশ
করেছেন সমাবেশ
কবিদের মিলনমেলা
এভাবেই কাটাতেন বেলা।
এমনি করেই একদিন
এলো জীবনের শেষদিন
চলে গেলেন পরপারে
সব বাঁধন ছিন্ন করে।
রেখে গেছেন মোদের তরে
তাঁর সমস্ত আদর্শ ও গান
সঠিক পথে চলতে হলে
সেসব সুধা পেয় প্রাণ।
গানের পাখি_জিয়াউর রাহমান জনি
গানের পাখি গান গাইতো যে
মিষ্টি মধু সুরের,
মিষ্টি ভাষায় গান শুনতে তার
আসতো মানুষ দূরের।
গাইতেন তিনি গলা ছেড়ে
জিকির করতেন আল্লার,
বলতেন তিনি এদের কথা শ্রমিক-মাঝি মাল্লার।
ভয় করেননি বুলেট বোমা
ভয় করেননি গুলি,
অন্যায় দেখলে উঠতেন রেগে
আঙ্গুল দুটি তুলি।
ছড়ার পাখি গড়ার পাখি
গানের পাখি তিনি,
নামটি তার মল্লিক নামেই চিনি।
যার গানে ঘুম ভাঙে_মোহাম্মদ সায়েদ কবির
যার গানে ঘুম ভাঙ্গে
যার গানে মন জাগে
যার গানেতে দ্বীনের বাণী
ছড়ায় আলো ঝিকমিক,
সে তো আমার গানের পাখি
মতিউর রহমান মল্লিক।
যার গানে পাখি নাচে
যার গানে হৃদয় দোলে
যার গানেতে হার মানে
কোকিলে কুহু, কুহু কিক
সে তো আমার গানের পাখি
মতিউর রহমান মল্লিক।
মানব মল্লিক_আরিফুল ইসলাম
মল্লিক ভায়ের কথা খুব বেশি মনে পড়ে
আজও তার কাব্যিক কবিতার মাঝে,
নিত্যদিনের ধর্মীয়তার কুল যায় ঝড়ে
তার কবিতায় ধর্মীয়তার ফুল যায় ঝরে
মল্লিক আজ নেই! রয়েছে কবিতা
আর স্মৃতির পলকে রয়েছে আজ
কলমের কালি, কবিতার খাতা।
সাহিত্য-সংস্কৃতির মহড়া স্বজন প্রীতি
সব রয়েছে নেই শুধু কবি,
তবু কবিতা লেখা, কণ্ঠ সুরের প্রতি
দুর্বল কোনো বা কেউ না হবি।
শুধু নেই, নেই শিল্পী কবি মল্লিক
আগের মত নবসুরে ধর্মের গান
আর গাইবে না মানব মল্লিক।